হাওরে ইজারা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত : মৎস্য উপদেষ্টা
- আপলোড সময় : ১১-১২-২০২৪ ১০:০৮:২৭ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১১-১২-২০২৪ ১০:১৫:৪৯ পূর্বাহ্ন
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, হাওরে ইজারা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। মানুষের জীবন ও জীবিকা নষ্ট করে ইজারা দেওয়ার কোনও প্রশ্নই আসে না। যেসব এলাকায় সমস্যা, আপনারা আমাদের জানান। আমরা সেখানে যাবো। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘জাতীয় হাওর সংলাপে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। হাওরের প্রাণ-প্রকৃতি, পরিবেশ, জীবন-জীবিকা, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও মানবাধিকার সুরক্ষায় এ আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজেনাস নলেজ (বারসিক) ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। হাওর জীববৈচিত্র্যের আধার উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, হাওরাঞ্চলে ১৪৩ প্রজাতির দেশি মাছ, ১২ প্রজাতির বিদেশি মাছ রয়েছে। কয়েক প্রজাতির মিঠা পানির চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রকার ছোট-বড় মাছ, শামুক, ঝিনুক বিদ্যমান। এছাড়া দেশের মোট গবাদি পশুর ২২ শতাংশ, হাঁস ২৪ শতাংশ, ১২৯ দেশীয় ও ১২৮ প্রজাতির বিদেশি পাখি, ২৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৯ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ৪০ প্রজাতির সরীসৃপ এবং কয়েক প্রজাতির ধান রয়েছে। ফরিদা আখতার বলেন, মৎস্য ও প্রাণিস¤পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর চাষের মাছ নিয়ে খুব বেশি বলা হতো। দেশি মাছের কথা বললেই হাওরের মাছের কথা চলে আসে। অন্যদিকে যখন মৎস্যজীবীর কথা বলা হয়, তখন প্রকৃত মৎস্যজীবী, অরিজিনাল মৎস্যজীবী - এ রকম কথা চলে আসছে। এর মানে হলো, এ পেশায় অনেকেই অন্যায়ভাবে প্রবেশ করেছে। যারা সত্যিকারের মৎস্যজীবী তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। তিনি বলেন, হাওর নিয়ে সবসময় টানাটানি হয়। মন্ত্রণালয়গুলো কেউ দায়িত্ব নিতে চায় না। হাওর রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার, হাওর রক্ষায় মৎস্য ও প্রাণিস¤পদ মন্ত্রণালয় দায়িত্ব পালন করবে। তিনি আরও বলেন, হাওরে যেমন মাছ ও ধান আছে তেমনই প্রাণিস¤পদ রয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে হাওরে উফশী ও হাইব্রিড ধানে কীটনাশক ও হার্বিসাইড ব্যবহারের মৎস্য ও প্রাণিস¤পদ খাতকে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। মেশিন দিয়ে ফসল কাটা হচ্ছে। এই মেশিন হাওরে নামার ফলে মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমি কৃষি উপদেষ্টাকে জানিয়েছি, হাওরের ধানে যেন কীটনাশক না দেয়। মা মাছকে রক্ষা করতে হবে। উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, রোমান্টিক মনে ইটনা মিঠামইনের যে সড়কটা হল। এটা করা কি ঠিক হয়েছে? হাওর রক্ষা করতে হবে, মিঠামইন সড়কটা বদলাতে হবে। সিলেটের মানুষ আমাকে অনুরোধ করেছে অন্তত পানি চলাচলের ব্যবস্থা করা হোক। এই সড়কটা ঠিক করতে হবে। আমরা সড়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। মানবাধিকারকর্মী ও এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদার সভাপতিত্বে সভায় আরও ছিলেন রংপুর বিভাগের পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, শেয়ার দ্য প্ল্যানেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট তেৎসু চুচুই, বেলার ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি ড. লেলিন চৌধুরী, অধ্যাপক আফজালুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রধান মো. বেলাল উদ্দীন বিশ্বাস প্রমুখ। সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাওরাঞ্চলের কৃষক, জেলে, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, হাওরের স্থানীয় প্রতিনিধি, সাংবাদিক, উন্নয়ন সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ